আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
433 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (20 points)
reopened by
উস্তায, https://ifatwa.info/12840/ উত্তরে ব্যবসায়ের বিধান বর্ণনা করে বলেছেন যে ধোঁকা না দিলে কমবেশি মূল্য হলেও বই এক্সচেঞ্জ জায়েয হবে।
তবে আমার জানামতে একই পণ্যের অসম বিনিময় ঘটলে তা সুদ হবে। এটা কি শুধু নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের জন্য প্রযোজ্য? কিসের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য? বই এক্সচেঞ্জের বিষয়টি এর আওভূক্ত নয়?
ব্যাখ্যা করে বুঝালে খুশি হবো। জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে বর্নিত হয়েছেঃ

وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مَثَلًا بِمَثَلٍ سَوَاءً بِسَوَاءٍ يَدًا بِيَدٍ فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هٰذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيْعُوْا كَيْفَ شِئْتُمْ إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ

‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রূপার বিনিময়ে রূপা, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর, লবণের বিনিময়ে লবণ আদান প্রদান করা হলে সমপরিমাণে নগদে হাতে হাতে আদান প্রদান করতে হবে। তবে যদি অন্য কোনো জাতীয় কিছু দিয়ে লেনদেন হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পরিমাণের বিনিময় নির্ধারণ করে সম্মতির ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারো, যদি উভয়ে উপস্থিত থেকে নগদে আদান প্রদান করা হয়। 

সহীহ : মুসলিম ১৫৮৭, আবূ দাঊদ ৩৩৪৯, নাসায়ী ৪৫৬১, আহমাদ ২২৬৮৩, আহমাদ ২৬২১, সহীহ আল জামি‘ ৩৪৪৫, ইরওয়া ১৩৪৬।

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে  (سَوَاءً بِسَوَاءٍ) ‘‘সমান সমান’’ অর্থাৎ একজাতীয় দ্রব্য পরিমাণে সমান সমান হলে তা বিক্রয় বৈধ। যদি কমবেশী হয় তাহলে ঐ বেচা-কেনা সুদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব তা হারাম।

(إِذَا اخْتَلَفَتْ هٰذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيْعُوْا كَيْفَ شِئْتُمْ) ‘‘উল্লেখিত দ্রব্যসমূহের মধ্যে ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের সাথে বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী হলে দূষণীয় নয়। অর্থাৎ তা সুদ নয় বিধায় ঐ বেচা-কেনা বৈধ। অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, গম ও যব একজাতীয় দ্রব্য নয় বরং তা ভিন্ন জাতীয় দ্রব্য। অতএব গমের বিনিময়ে যবের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী করা বৈধ।

(يَدًا بِيَدٍ) ‘‘হাতে হাতে’’ অর্থাৎ বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। অর্থাৎ ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী বৈধ হলেও তার বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


أَخْبَرَنَا الْمُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ عَلْقَمَةَ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ حَدَّثَنِي مُسْلِمُ بْنُ يَسَارٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدٍ وَقَدْ كَانَ يُدْعَى ابْنَ هُرْمُزَ قَالَ جَمَعَ الْمَنْزِلُ بَيْنَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَبَيْنَ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَهُمْ عُبَادَةُ قَالَ نَهَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الذَّهَبِ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ بِالْفِضَّةِ وَالتَّمْرِ بِالتَّمْرِ وَالْبُرِّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرِ بِالشَّعِيرِ قَالَ أَحَدُهُمَا وَالْمِلْحِ بِالْمِلْحِ وَلَمْ يَقُلْهُ الْآخَرُ إِلَّا سَوَاءً بِسَوَاءٍ مِثْلًا بِمِثْلٍ قَالَ أَحَدُهُمَا مَنْ زَادَ أَوْ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلَمْ يَقُلْهُ الْآخَرُ وَأَمَرَنَا أَنْ نَبِيعَ الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ وَالْفِضَّةَ بِالذَّهَبِ وَالْبُرَّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرَ بِالْبُرِّ يَدًا بِيَدٍ كَيْفَ شِئْنَا 

মুআম্মাল ইবন হিশাম (রহঃ) ... মুসলিম ইবন ইয়াসার এবং আবদুল্লাহ্ ইবন উবায়দা (রহঃ) যাকে ইবন হুরমুয বলা হতো, তিনি বলেন, উবাদা ইবন সামিত এবং মুআবিয়া (রাঃ) এক স্থানে একত্র হলে উবাদা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রূপার বিনিময়ে রূপা, খোরমার বিনিময়ে খোরমা, গমের বিনিময়ে গম এবং যবের বিনিময়ে যব বেচাকেনা করতে। তাদের একজন বলেছেন এবং লবণের বিনিময়ে লবণ, অন্যজন তা বলেননি। কিন্তু সমপরিমাণে ও কমবেশি না। হলে দোষ নেই। তাদের একজন বললেনঃ যে ব্যক্তি বেশি নিল বা দিল, সে সুদে লিপ্ত হলো। অন্যজন তা বলেননি। আর তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, আমরা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারি রৌপ্যের বিনিময়ে স্বর্ণ এবং স্বর্ণের বিনিময়ে রৌপ্য, গমের পরিবর্তে যব এবং যবের পরিবর্তে গম নগদ লেনদেনের সাথে, যেভাবে আমরা ইচ্ছা করি।

(নাসায়ী ৪৪৬১)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
উক্ত হাদীস গুলোর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে আহনাফ গন বলেছেন যে সুদের ইল্লত হলো কদর (যেটাকে মাপা যায়, এমন বস্তু)  এবং জিনস (একই জাতের হওয়া) এক হওয়া।
,
এর মধ্যে কদর এর ব্যখ্যায় বলা হয়েছে দুটি বস্তু।
এক, কাইলি (যেটাকে কোনো পাত্র বা মাপ দ্বারা মাপা হয়।)
দুই, ওযনি (যেটাকে ওযন করা যায়।)
,
প্রশ্নে উল্লেখিত বস্তু (বই) যেহেতু এই দুইটার কোনোটাই নয়,বরং এটি সাধারণত মা'দুদাত তথা সংখ্যা গত বিষয়।   
তাই এতে টাকা কম বেশি হলে (যদি উভয়েই সন্তুষ্ট থাকে) তাহলে কোনো সুদ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (20 points)
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
by (20 points)
উস্তায, একটির সাথে একটিই বিনিময় করতে হবে নাকি উভয়ের সম্মতিতে সংখ্যার পার্থক্য হলেও সমস্যা নেই নাকি মূল্যমান অনুযায়ী?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...