হাদীস শরীফে বর্নিত হয়েছেঃ
وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مَثَلًا بِمَثَلٍ سَوَاءً بِسَوَاءٍ يَدًا بِيَدٍ فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هٰذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيْعُوْا كَيْفَ شِئْتُمْ إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ
‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রূপার বিনিময়ে রূপা, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর, লবণের বিনিময়ে লবণ আদান প্রদান করা হলে সমপরিমাণে নগদে হাতে হাতে আদান প্রদান করতে হবে। তবে যদি অন্য কোনো জাতীয় কিছু দিয়ে লেনদেন হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পরিমাণের বিনিময় নির্ধারণ করে সম্মতির ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারো, যদি উভয়ে উপস্থিত থেকে নগদে আদান প্রদান করা হয়।
সহীহ : মুসলিম ১৫৮৭, আবূ দাঊদ ৩৩৪৯, নাসায়ী ৪৫৬১, আহমাদ ২২৬৮৩, আহমাদ ২৬২১, সহীহ আল জামি‘ ৩৪৪৫, ইরওয়া ১৩৪৬।
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে (سَوَاءً بِسَوَاءٍ) ‘‘সমান সমান’’ অর্থাৎ একজাতীয় দ্রব্য পরিমাণে সমান সমান হলে তা বিক্রয় বৈধ। যদি কমবেশী হয় তাহলে ঐ বেচা-কেনা সুদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব তা হারাম।
(إِذَا اخْتَلَفَتْ هٰذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيْعُوْا كَيْفَ شِئْتُمْ) ‘‘উল্লেখিত দ্রব্যসমূহের মধ্যে ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের সাথে বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী হলে দূষণীয় নয়। অর্থাৎ তা সুদ নয় বিধায় ঐ বেচা-কেনা বৈধ। অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, গম ও যব একজাতীয় দ্রব্য নয় বরং তা ভিন্ন জাতীয় দ্রব্য। অতএব গমের বিনিময়ে যবের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী করা বৈধ।
(يَدًا بِيَدٍ) ‘‘হাতে হাতে’’ অর্থাৎ বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। অর্থাৎ ভিন্ন জাতীয় দ্রব্যের বেচা-কেনাতে পরিমাণে কমবেশী বৈধ হলেও তার বিনিময় নগদ হতে হবে বাকী চলবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
أَخْبَرَنَا الْمُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَعِيلُ وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ عَلْقَمَةَ عَنْ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ حَدَّثَنِي مُسْلِمُ بْنُ يَسَارٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدٍ وَقَدْ كَانَ يُدْعَى ابْنَ هُرْمُزَ قَالَ جَمَعَ الْمَنْزِلُ بَيْنَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَبَيْنَ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَهُمْ عُبَادَةُ قَالَ نَهَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الذَّهَبِ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ بِالْفِضَّةِ وَالتَّمْرِ بِالتَّمْرِ وَالْبُرِّ بِالْبُرِّ وَالشَّعِيرِ بِالشَّعِيرِ قَالَ أَحَدُهُمَا وَالْمِلْحِ بِالْمِلْحِ وَلَمْ يَقُلْهُ الْآخَرُ إِلَّا سَوَاءً بِسَوَاءٍ مِثْلًا بِمِثْلٍ قَالَ أَحَدُهُمَا مَنْ زَادَ أَوْ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلَمْ يَقُلْهُ الْآخَرُ وَأَمَرَنَا أَنْ نَبِيعَ الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ وَالْفِضَّةَ بِالذَّهَبِ وَالْبُرَّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرَ بِالْبُرِّ يَدًا بِيَدٍ كَيْفَ شِئْنَا
মুআম্মাল ইবন হিশাম (রহঃ) ... মুসলিম ইবন ইয়াসার এবং আবদুল্লাহ্ ইবন উবায়দা (রহঃ) যাকে ইবন হুরমুয বলা হতো, তিনি বলেন, উবাদা ইবন সামিত এবং মুআবিয়া (রাঃ) এক স্থানে একত্র হলে উবাদা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিষেধ করেছেন স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রূপার বিনিময়ে রূপা, খোরমার বিনিময়ে খোরমা, গমের বিনিময়ে গম এবং যবের বিনিময়ে যব বেচাকেনা করতে। তাদের একজন বলেছেন এবং লবণের বিনিময়ে লবণ, অন্যজন তা বলেননি। কিন্তু সমপরিমাণে ও কমবেশি না। হলে দোষ নেই। তাদের একজন বললেনঃ যে ব্যক্তি বেশি নিল বা দিল, সে সুদে লিপ্ত হলো। অন্যজন তা বলেননি। আর তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, আমরা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারি রৌপ্যের বিনিময়ে স্বর্ণ এবং স্বর্ণের বিনিময়ে রৌপ্য, গমের পরিবর্তে যব এবং যবের পরিবর্তে গম নগদ লেনদেনের সাথে, যেভাবে আমরা ইচ্ছা করি।
(নাসায়ী ৪৪৬১)
উক্ত হাদীস গুলোর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে আহনাফ গন বলেছেন যে সুদের ইল্লত হলো কদর (যেটাকে মাপা যায়, এমন বস্তু) এবং জিনস (একই জাতের হওয়া) এক হওয়া।
প্রশ্নে উল্লেখিত বস্তু (বই) যেহেতু এই দুইটার কোনোটাই নয়,বরং এটি সাধারণত মা'দুদাত তথা সংখ্যা গত বিষয়।