আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু উস্তাজ,
আল্লাহ তাআলাই একমাত্র শেফাদানকারী,এই আকিদা রেখে তাবিজ ব্যবহার করা জায়েজ আছে।
তবে দেখা যাচ্ছে,
১/কেউ এলার্জি,দাতে ব্যাথা,কোমরে ব্যাথা,পিত্তথলিতে পাথর এগুলোর জন্য তাবিজ নেয়,তবে বিশ্বাস করে তাবিজের ক্ষমতা নেই,আল্লাহই আরোগ্য দানকারী।
তার সাথে সাথে মরা বাড়ি,আছি বাড়ি গেলে তাবিজের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাবে এই আকিদাও পোষণ করে,এটা কি ঠিক?
২/সাদা স্রাবের জন্য গাছের শিকড় দ্বারা তৈরি ওষুধ কি খাওয়া যাবে?
৩/কবিরাজের চিকিৎসা কি সরাসরি নাজায়েজ?জীন সাধনা কি নাজায়েজ?
৪/যারা কবিরাজ তাদের হাত অস্বাভাবিক বড় হয়।এটা শুনেছি তারা না চাইতেই আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের এমনটা হয়।অটোমেটিক হাত চলে।তুলা রাশি তাদের?নরমালি ১২টি রাশি যা বিশ্বাস করা যাবে না।তা নয়,অন্যভাবে তুলা রাশি।বুঝিয়ে বলতে পারছি না হয়তো।এমনটা কি?
৫/এলাকার খতিব সাহেব চলাফেরা,ব্যবহার সব ভালো।মিলাদুন্নবী পালন করে না।দুআতেও উম্মাহর জন্য দরদ বোঝা যায়।প্যারানরমাল সমস্যাতে আক্রান্ত হলে তার মাধ্যমে কবিরাজের সন্ধান নেয়া হয়সে কবিরাজ জীন সাধনা করে।সেই খতিব সাহেবের খুতবা শোনা যাবে?তার সম্বন্ধে ধারণা কেমন রাখা উচিত?
৬/তালিমে যাওয়া হয়।যশোরেরএকটা শহরে।বনানী,ঢাকা পয়েন্টের তালিম।ফাযায়েলে আমল বই থেকে তালিম করা হয়। মাছ কাটা দুআ,চুল ধরানো দুআর কথা বলে।মানে এগুলো জেনে জেনে আমল করার কথা বলে।এগুলো কি সুন্নতে আছে?তালিম শেষে মাথা নিচু করে এক হাতের তালুর উপর অন্য হাত রেখে দরুদ আর বৈঠক শেষের দুআ পড়তে বলা হয়।এটা কি ঠিক আছে?

৭/নিয়ত ভালো,কেউ নেশা করে,বাবা মায়ের অবাধ্য।এজন্য ইন্নল্লহা ইয়াসমিই মাইয়াশা ১১বার পড়লে সে বাধ্য হবে।এমন ভালো ভালো উদ্দেশ্যে কুরআনেরই কোনো আয়াত নির্দিষ্ট সংখ্যক বার পড়লে বিদআত হবে?

1 Answer

0 votes
by (645,900 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/10704/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী কয়েক প্রকার তাবিজ জায়েজ নয়। যথা-

১-কুরআন হাদীস দ্বারা ঝাড়ফুক দেয়া ছাড়া শুধু তামা, পিতল বা লোহা দ্বারা তাবিজ বানিয়ে লটকিয়ে রাখা। অর্থাৎ শুধু এগুলো লটকানো দ্বারাই রোগমুক্ত হওয়া যাবে বিশ্বাস করে তা লটকানো নাজায়িজ।

২-এমন তাবিজ যাতে আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত, দুআয়ে মাসূরা ব্যতিত শিরকী কথা লিপিবদ্ধ থাকে।

৩-তাবীজকে মুয়াসসার বিজজাত তথা তাবীজ নিজেই আরোগ্য করার ক্ষমতার অধিকারী মনে করে তাবিজ লটকানো। এ বিশ্বাস জাহেলী যুগে ছিল, বর্তমানেও ইসলাম সম্পর্কে কিছু অজ্ঞ ব্যক্তিরা তা মনে করে থাকে।

৪-যে কালামের অর্থ জানা যায় না এমন শব্দ দ্বারা তাবিজ লেখা।

৫-আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তাবিজ লেখা।

 
এ সকল সুরতে সর্বসম্মত মতানুসারে নাজায়িজ ও হারাম এবং শিরক। এতে কোন সন্দেহ নেই।

কিন্তু তাবিজে কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক থাকলে তা  জায়িজ।  কেননা এসব তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত তথা আরোগ্যের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই মনে করা হয়। যেমন ডাক্তার প্রদত্ত ঔষদের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত আল্লাহকে মনে করার কারণে তা নাজায়িজ নয়। যদি মুয়াসসার বিজজাত ঐ ঔষধকে মনে করলে ঔষধ সেবনও হারাম হবে।
.
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}
,
আরো জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
তাবিজ যদি কোরআনের আয়াত বা দোয়া দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে তার সম্মান রক্ষা করা উচিত। অপবিত্র স্থানে না নেওয়াই উত্তম বলে অনেকে মনে করেন।

মরা বাড়ি বা জানাজার জায়গা নিজে কোনো অপবিত্র জায়গা নয়। বরং ইসলামে মৃতদের প্রতি সম্মান দেখানো হয়। তাই শুধুমাত্র জানাজা বা মৃতদেহ থাকায় সেই জায়গা "অপবিত্র" হয়ে যায়—এমনটা ইসলামী শরিয়াহ স্পষ্টভাবে বলে না।

ইসলামীভাবে, মরা বাড়িতে যাওয়া মানেই তাবিজ নষ্ট হয়ে যাবে — এর স্পষ্ট কোনো ভিত্তি নেই।

লোকবিশ্বাসে, অনেকে এমনটা বিশ্বাস করেন। তবে শরীয়তে এমন কোনো কথা নেই।

(০২)
হ্যাঁ, যাবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৩)
কুরআন হাদীস বিরোধী না হলে নাজায়েজ নয়।

জীন সাধনা যদি নাজায়েজ পদ্ধতিতে করা হয়,সেক্ষেত্রে তাহা নাজায়েজ।
অনেক ক্ষেত্রে সেটি শিরকের পর্যায়ে চলে যায়।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
কুরআন হাদীসে এর কোনো ভিত্তি নেই।

(০৫)
সেই খতিব সাহেবের খুতবা শোনা যাবে।

প্রশ্নের বিবরন মতে তার সম্বন্ধে ভালো ধারণা রাখারই পরামর্শ থাকবে। 
তবে উল্লেখিত কবিরাজের কাছে যাওয়া যাবেনা।

(০৬)
দোয়া গুলি উল্লেখ করলে জবাব প্রদানে সুবিধা হতো।

শেষে দরুদ শরীফ ও বৈঠক শেষের যে দোয়া পড়া হয়,এটি জায়েজ আছে।
কোনো সমস্যা নেই।

তবে প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি কুরআন হাদীসে নেই। তাই এটিকে আবশ্যকীয় বা দ্বীনের অংশ মনে করা যাবেনা।

(০৭)
এটিকে আবশ্যকীয় বা দ্বীনের অংশ মনে করে আমল করলে বিদ'আত হবে।
অন্যথায় বিদ'আত হবেনা।

(তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন সর্বাবস্থায় বিদ'আত বলেছেন, তাই তার অনুসারীগণ সেই মতের উপর আমল করতে পারেন।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...