আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আস্সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

রমাদানের শেষ দশকের রাতগুলো খবই গুরুত্বপুর্ন। রাসুল (সা.) এই রাতগুলো জেগে ইবাদাত করতেন। এই বিষয়টা জানার পর থেকে আমি সিদ্ধান্ত নেই যে আমিও রাতগুলো জেগে ইবাদাত করে কাটাব। এর ফলে আমার শরীরের কোনো ক্ষতি হওয়ার সুযোগ নেই এবং আমি এটা করতে সক্ষম আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমার পিতা-মাতা এইটা করতে নিষেধ করছেন। বলছেন যে আমার শরীর খারাপ হয়ে যাবে, কোনো কিছু অতিরিক্ত ভালো না, পাগল-টাগল হয়ে যাচ্ছি ইত্যাদী। এই অবস্থায় কি আমার ওপর পিতা মাতার আদেশ পালন করা আবশ্যক? নাকি না পালন করলেই সমস্যা নেই?

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

জবাব,

একজন মুমিনের জীবনে নফল ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। নফল ইবাদতের মাধ্যমে মুমিনের ঈমান শক্তিশালী হয় এবং ফরজ আমলের ত্রুটি বিচ্যুতি পূর্ণতা লাভ করে। আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নিষেধ পালন করা ও গুনাহ থেকে বাঁচা সহজ হয়। সহীহ হাদীসে এসেছে, নফল ইবাদতের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করে। -সহীহ বুখারী ৬৫০২

অপর হাদিসে এসেছে,

أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة صلاته، فإن وجدت تامة كتبت تامة، وإن كان انتقص منها شيء، قال: انظروا هل تجدون له من تطوع يكمل له ما ضيع من فريضة من تطوعه، ثم سائر الأعمال تجري على حسب ذلك –رواه النسائي (466) وأبو داود (864) والترمذي (413) وقال الترمذي: حديث حسن.

কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাযের হিসেব নেয়া হবে। পরিপূর্ণ পাওয়া গেলে পরিপূর্ণ বিনিময় দেয়া হবে। আর যদি ফরজ নামাযে কোনো ত্রুটি থাকে, আল্লাহ তায়ালা বলবেন, দেখ আমার বান্দার কোনো নফল নামায আছে কি না, যা দ্বারা তার ফরয নামাযের ত্রুটি পূরণ করা যায়। এরপর অন্যান্য আমলের হিসেবও একইভাবে নেয়া হবে।” জামে’তিরমিযি ৪১৩, সুনানে নাসায়ী ৪৬৬, সুনানে আবু দাউদ, ৮৬৪

আর আমাদের আমল যে কতো ত্রুটিপূর্ণ, তা তো বলাই বাহুল্য। সুতরাং সবসময় নফল বাদ দেয়া অবশ্যই একজন মুমিনের পরকালের নাজাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

তাছাড়া নফল আমল আলাদা আলাদা প্রতিটি আমল নফল হলেও সমষ্টিগতভাবে নফল আমলের প্রতি যত্নবান থাকা ফরজ। কেউ যদি সবসময় সকল নফল আমল বাদ দিয়ে দেয়, তাহলে সে গুনাহগার হবে।

সুতরাং পিতা মাতার জন্য সন্তানকে সবসময় নফল ইবাদত থেকে বারণ করার অধিকার নেই। কেউ যদি করেন, তাহলে তাদের এই বারণ মান্য করা সন্তানের জন্য জায়েয নয়। একইভাবে তারা যদি অপ্রয়োজনে দ্বীন ও ঈমান আমলের প্রতি গুরুত্বহীনতার কারণে নফল ইবাদত থেকে বারণ করেন, তবুও তাদের বারণ মান্য করার সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে তাদের বাধা উপেক্ষা করেই নফল ইবাদত করতে হবে। তবে সর্বাবস্থায়ই তাদের সঙ্গে সদাচার বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে কখনো তাদের অগোচরে নফল ইবাদত করবে এবং তাদেরকে সুন্দরভাবে বুঝানোর চেষ্টা করবে।

হ্যাঁ, মা-বাবা যদি যুক্তিসংগত কোনো কারণে সন্তানকে বিশেষ কোনো নফল ইবাদতে বাধা দেন বা বিশেষ কোনো সময়ের জন্য বারণ করেন; যেমন নফল রোযার কারণে যদি সন্তানের স্বাস্থ্যগত অস্বাভাবিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে বা সন্তানের নফল নামাযের কারণে খেদমতের মুখাপেক্ষী মা-বাবার কষ্ট হয়, তাহলে তাদের এই বারণ মান্য করা সন্তানের জন্য জরুরি। বরং এক্ষেত্রে পিতা মাতা বারণ না করলেও এরকম নফল আমলগুলো আপাতত বন্ধ রেখে যথাসম্ভব অন্যান্য নফল আমল করা এবং পিতা মাতার খেদমত আঞ্জাম দেয়া সন্তানের দায়িত্ব। (আলফাতাওয়াল কুবরা, ইবনে তাইমিয়া রহ.: ৫/৩৮১; আলফাতাওয়াল ফিকহিয়া, ইবনে হাজার হাইতামি রহ.: ৫/৬-৯; আলবাহরুর রায়িক: ৫/৭৮; রদ্দুল মুহতার: ৪/১২৪-১২৫) (সংগৃহীত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...