আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
224 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (22 points)
edited by
পুরুষ যদি চারটি বিয়ে করে তাহলে তার স্ত্রীদের মধ্যে হতে কি সকল স্ত্রীকে কি সমান  মহব্বত  করতে হবে । এখানে আমি বিশেষভাবে মহব্বত এর কথা বলছি।  মানে কাউকে বেশি ভালোবাসা বা  কাউকে কম ভালোবাসা।  ইদানিং দেখা যায়  যে  কাপড়চোপড় খাওয়া-দাওয়া সব কিছু সমান হলেও মহব্বত সমান  হয় না। এতে একজন কষ্ট পায়।  কিছু কিছু আলেম বলেছে মহব্বতের নাকি বৈষম্য রাখা যায়। এটা নাকি কারো  এক্তিয়ারের  বিষয় না। তারা উদাহরণ দেয় হযরত মুহাম্মদ সাঃ নাকি হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে সবথেকে বেশি ভালোবাসতেন। এ কথাটা কি সত্যি।

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। 
জবাবঃ- 
ইসলাম পুরুষদেরকে যথেচ্ছ বিবাহের কোন সুযোগ দেয় নি। (এক সময়ে চারটির অধিক স্ত্রী রাখা সম্পূর্ণ হারাম।) আর ইসলাম পুরুষদেরকে একাধিক তথা চারটি বিয়ের ‘নির্দেশ’ দেয়নি, বরং প্রয়োজনীয় শর্ত সাপেক্ষে ‘অনুমতি’ দিয়েছে। যদি শর্ত পূরণ করা না যায় তাহলে একটির অধিক বিবাহ করাকেও হারাম বলেছে। ইরশাদ হয়েছে,
 فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً 
 অর্থ: "তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি।" (সূরা নিসা, আয়াত ৩) 
 এই আয়াতে একের অধিক বিয়ে করার আগে সমতার শর্ত দেয়া হয়েছে। একাধিক স্ত্রীর সবার মাঝে সমতা ও সমান অধিকার বিধান করা ফরজ করেছে। যদি সকলের হক যথাযথভাবে আদায় করার ক্ষেত্রে সামান্যতমও সংশয় থাকে তাহলে একের অধিক বিয়েকে ‘হারাম’ ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে পুরুষদেরকে স্ত্রীদের মধ্যে সমতা বিধানের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,
 ﴿وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ فَلَا تَمِيلُواْ كُلَّ ٱلۡمَيۡلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلۡمُعَلَّقَةِۚ وَإِن تُصۡلِحُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٢٩﴾ [النساء: ١٢٩] 
“তোমরা যতই আগ্রহ পোষণ কর না কেন তোমরা কখনো স্ত্রীদের প্রতি সমান ব্যবহার করতে পারবে না। তবে তোমরা কোনো একজনের দিকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড় না ও অপরকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখ না। যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর ও সাবধান হও তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৯] 
 এখানে কাম্য হলো, রাত্রি যাপনে স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করা, পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকের নিকট এক রাত করে যাপন করা এবং প্রত্যেকের থাকা, খাওয়া ও পরার যথোপযুক্ত বন্দোবস্ত করা। অন্তরের ভালোবাসা সবার জন্য সমান হতে হবে এমন বিধান শরী‘আত দেয় নি। কেননা তা মানুষের ইখতিয়ার বহির্ভূত। কিছু মানুষ আছে, যারা তাদের একাধিক স্ত্রীর একজনকে নিয়ে পড়ে থাকে, অন্যজনের দিকে ভ্রুক্ষেপও করে না; একজনের নিকট বেশি বেশি রাত কাটায় কিংবা বেশি খরচ করে, অন্যজনের কোনো খোঁজই নেয় না। নিঃসন্দেহে এরূপ একপেশে আচরণ হারাম। কিয়ামত দিবসে তাদের যে অবস্থা দাঁড়াবে তার একটি চিত্র আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীসে আমরা পাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
 «مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ فَمَالَ إِلَى إِحْدَاهُمَا، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّهُ مَائِلٌ» 
‘যার দু’জন স্ত্রী আছে, কিন্তু সে তাদের একজনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে, কিয়ামত দিবসে সে এক অংশ অবস অবস্থায় উঠবে”।( সুনান আবু দাউদ-২১৩৩) 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
অন্তর যেহেতু কারো ইখতিয়ারে নেই,তাই যদি অন্তর কারো প্রতি একটু ঝুকে যায়,এবং অন্যান্যর প্রতি ঠিকই বাহ্যিক খেয়াল রাখা হয়,তাহলে অন্তরের এই ঝুকে যাওয়ার ধরুণ ঐ ব্যক্তির কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,260 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...