ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব:-
https://ifatwa.info/6603/
ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
পরিবারের জন্য
খরচ করা,মা বাবার ভরনপোণের জন্য খরচ করা উত্তম কাজ।
মা বাবা নিজেদের
ভরনপোষণের ক্ষেত্রে অসমর্থ হলে সন্তানদের জন্য তাদের ভরনপোষণের খরচ দেওয়া শুধু শরীয়তেই
নয় এটা মানবতার দিক লক্ষ্য করেও জরুরি।
হাদিস শরিফে
এসেছে,
রাসুলুল্লাহ
(সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল,
তারপর তোমার স্ত্রীর,
তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের
খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)
মা-বাবা ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার
সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে,
তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ
দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে,
তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে।
তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম,
আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি
তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন,
তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ
দেওয়া ওয়াজিব নয়।
★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম
হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা
নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে
হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির
ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া
ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে
যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)
মা-বাবার ভরণ-পোষণের
দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান
ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই,
তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান
হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার
জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী,
তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের
শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের।
অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত
ছুরতে আপনার উপর আপনার পিতা মাতাকে দেখাশোনার দায়িত্ব রয়েছে। আপনি যদি স্বামী থেকে হাত খরচের জন্য দেয়া টাকা
বা বা অন্য সময়ে দেয়া টাকা বাঁচিয়ে বাবা মাকে দেন,
তাহলে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, আপনার স্বামী আপনাকে যেই টাকা দেন উহার
মালিক আপনি। আপনার ইচ্ছে মত বৈধ কাজে তা ব্যবহার করা জায়েয আছে।
স্ত্রীর
মালিকানাধীন সম্পদে স্বামীর হস্তক্ষেপ করা জায়েয নেই। সর্বোচ্ছ স্বামী পরামর্শ দিতে
পারেন। বাবা মার প্রয়োজনে স্বামীকে
বুঝিয়ে (আপনার স্বামী রাজি হলে) তাদের প্রয়োজন পূরন করতে পারেন। নিজে না পারলে
স্বামীর পরিবারের দ্বীনদার কোন মুরব্বী (যাকে স্বামী মান্য করে) এর মাধ্যমে বা
স্থানীয় কোন আলেমের মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে বুঝাতে পারেন। হেকমত ও ভালবাসার মাধ্যমে উক্ত
সমস্যার সমাধানের ফিকির ও চেষ্টা করুন। ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
সর্বপরি আল্লাহ তায়ালার নিকট দুআর অব্যাহত রাখতে হবে।