আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আস সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ উস্তাদ,আমি কুরআনের একজন ত্বলিবাহ।আমার আল হামদুলিল্লাহ তাজউইদ শেখা হয়েছে ভালোভাবে।এখনো শিখতেছি আল হামদুলিল্লাহ।তাজউইদের পরীক্ষায় আমার তেলাওয়াত শুনে উস্তাদ আমাকে পারমিশন ও দিয়েছেন যে আমি অন্যেকে শেখাতে পারবো ইন শা আল্লাহ। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি বোনদেরকে কুরআন শিক্ষার বিনিময়ে কি অর্থ নিতে পারবো?যদি এই অর্থ যদি আমার নিজের কুরআন শিক্ষার পিছনে ব্যয় করতে চাই / আমার পরিবারের খরচ চালাতে চাই এটা কি জায়েজ হবে কি?

আমি যদি কুরআন শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নিয়ে থাকি তাহলে কি আমার আখিরাতে কোনো অংশ থাকবে না?আমি দুনিয়ায় সেহেতু প্রাপ্য নিচ্ছি তাহলে কি রব আমাকে আখিরাতে কোনো পুরষ্কার দিবেন না?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/47972/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

কুরআন শিক্ষা দিয়ে বেতন নেয়া জায়েয কিনা?
এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামদের মতপার্থক্য রয়েছে।কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম বিশেষকরে মুতাক্বাদ্দিমিন(৩০০ হিজরী পৃর্ব) হানাফি ফকিহগণ নাজায়েয বলেছেন।তবে মুতা'আখখিরিন(৩০০ হিজরী পরবর্তী) হানাফি ফকিহগণ আবার জায়েয বলেছেন।

এ দুইটি মতের মধ্যে বিশুদ্ধ মত হচ্ছে- কুরআন শিক্ষা দিয়ে বেতন নেয়া জায়েয।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْشَرٍ الْبَصْرِيُّ هُوَ صَدُوقٌ يُوسُفُ بْنُ يَزِيدَ الْبَرَّاءُ قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ الأَخْنَسِ أَبُو مَالِكٍ عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ نَفَرًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَرُّوا بِمَاءٍ فِيهِمْ لَدِيغٌ أَوْ سَلِيمٌ فَعَرَضَ لَهُمْ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَاءِ فَقَالَ هَلْ فِيكُمْ مِنْ رَاقٍ إِنَّ فِي الْمَاءِ رَجُلاً لَدِيغًا أَوْ سَلِيمًا فَانْطَلَقَ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ عَلٰى شَاءٍ فَبَرَأَ فَجَاءَ بِالشَّاءِ إِلٰى أَصْحَابِه„ فَكَرِهُوا ذ‘لِكَ وَقَالُوا أَخَذْتَ عَلٰى كِتَابِ اللهِ أَجْرًا حَتّٰى قَدِمُوا الْمَدِينَةَ فَقَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَخَذَ عَلٰى كِتَابِ اللهِ أَجْرًا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا كِتَابُ اللهِ.

ইবনু ‘আববাস হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহাবীগণের একটি দল একটি কূয়ার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। কূপের পাশে অবস্থানকারীদের মধ্যে ছিল সাপে কাটা এক ব্যক্তি কিংবা তিনি বলেছেন, দংশিত এক ব্যক্তি। তখন কূপের কাছে বসবাসকারীদের একজন এসে তাদের বললঃ আপনাদের মধ্যে কি কোন ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? কূপ এলাকায় একজন সাপ বা বিচ্ছু দংশিত লোক আছে। তখন সহাবীদের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বক্রী দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন। ফলে লোকটির রোগ সেরে গেল। এরপর তিনি ছাগলগুলো নিয়ে তাঁর সাথীদের নিকট আসলেন, কিন্তু তাঁরা কাজটি পছন্দ করলেন না। তাঁরা বললেনঃ আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর পারিশ্রমিক নিয়েছেন। অবশেষে তাঁরা মাদ্বীনায় পৌঁছে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর পারিশ্রমিক গ্রহণ করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাক, তন্মধ্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার সবচেয়ে বেশি হক রয়েছে আল্লাহর কিতাবের। 
(বুখারী ৫৭৩৭.আধুনিক প্রকাশনী- ৫৩১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২১৩)


★উক্ত হাদীসের শেষে রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাক, তন্মধ্যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার সবচেয়ে বেশি হক রয়েছে আল্লাহর কিতাবের। 

★সুতরাং এটি পারিশ্রমিক নেয়ার বৈধতার উপর গুরুত্বপূর্ণ দলিল।  

অন্য এক হাদীসে এসেছে

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنِّي وَهَبْتُ مِنْ نَفْسِي فَقَامَتْ طَوِيلاً فَقَالَ رَجُلٌ زَوِّجْنِيهَا إِنْ لَمْ تَكُنْ لَكَ بِهَا حَاجَةٌ قَالَ هَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ تُصْدِقُهَا قَالَ مَا عِنْدِي إِلاَّ إِزَارِي فَقَالَ إِنْ أَعْطَيْتَهَا إِيَّاه“ جَلَسْتَ لاَ إِزَارَ لَكَ فَالْتَمِسْ شَيْئًا فَقَالَ مَا أَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ الْتَمِسْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَلَمْ يَجِدْ فَقَالَ أَمَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْءٌ قَالَ نَعَمْ سُورَةُ كَذَا وَسُورَةُ كَذَا لِسُوَرٍ سَمَّاهَا فَقَالَ قَدْ زَوَّجْنَاكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহল ইবনু সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, কোন এক মহিলা রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে দান করলাম। এরপর সে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকল। তখন একজন লোক বলল, আপনার দরকার না থাকলে, আমার সঙ্গে এর বিয়ে দিয়ে দিন। রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে মাহর দেয়ার মতো কি কিছু আছে? লোকটি বলল, আমার এ তহবন্দ ছাড়া আর কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, যদি তুমি তহবন্দখানা তাকে দিয়ে দাও, তাহলে তোমার কিছু থাকবে না। কাজেই তুমি অন্য কিছু খুঁজে আন। লোকটি বলল, আমি কোন কিছুই পেলাম না। নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, খুঁজে দেখ, যদি একটি লোহার আংটিও পাও। সে কিছুই পেল না। নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামজিজ্ঞেস করলেন, কুরআনের কিছু অংশ তোমার জানা আছে কি? লোকটি বলল, হ্যাঁ! অমুক অমুক সূরা আমার জানাআছে এবং সে সূরাগুলোর নাম বলল। নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, কুরআনের যা তোমার জানা আছে, তার বিনিময়ে আমি তাকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম। [বুখারী ৫১৩৫.২৩১০; মুসলিম ১৬/১২, হাঃ ১৪২৫, আহমাদ ২২৯১৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৯)

বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি বোনদেরকে কুরআন শিক্ষা দিয়ে তার বিনিময়ে অর্থ নিতে পারবেন।

এই অর্থ যদি আপনার নিজের কুরআন শিক্ষার পিছনে ব্যয় করতে চান/ আপনার পরিবারের খরচ চালাতে চান, এটা জায়েজ হবে।

আপনি যদি কুরআন শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নিয়ে থাকেন, তাহলেও আপনার আখিরাতে ছওয়াবের অংশ থাকবে।
তবে এক্ষেত্রে পড়ানোর সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত রাখতে হবে।

রব আপনাকে আখিরাতেও পুরষ্কার দিবেন, ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...